আইআইইউসি মহিলা অ্যাকাডেমি কমপ্লেক্সের জায়গা দখলের চেষ্টা
চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) মহিলা অ্যাকাডেমি কমপ্লেক্সের জায়গা দখলের ষড়যন্ত্র হয়েছে। এলাকার এক প্রভাবশালী মহিলা অ্যাকাডেমি কমপ্লেক্সের জায়গায় আনসার নিয়োগ করে তা অবৈধ দখলের তৎপরতা চালাচ্ছে। আনসার সদস্যরা প্রায় সময় ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা এবং অ্যাকাডেমির উন্নয়নকাজে বাধা দিচ্ছে, এমনকি গুলি করার হুমকি দিয়েছে। প্রায় ২ একর ৫৫ শতক জায়গার ওপর অবস্থিত সাত তলা আধুনিক এ কমপ্লেক্সে অধ্যায়নরত সাড়ে চার হাজার ছাত্রী এতে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
আইআইইউসির পারচেজ অ্যান্ড প্রোকিউরমেন্ট ডিভিশনের ডাইরেক্টর মহিউদ্দীন হোছাইন জানান, নগরীর বহদ্দরহাট এলাকায় আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ প্রায় ৬০টি দলিলের মাধ্যমে ২ একর ৫৫ শতক জায়গা কিনে ওই জমির ওপর আইআইইউসি মহিলা অ্যাকাডেমি কমপ্লেক্সটি গড়ে তোলেন। প্রস্তাবিত ২০ তলা ভবনের নির্মিত সাত তলায় প্রায় সাড়ে চার হাজার ছাত্রী অধ্যায়ন করছেন। এতে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ১৫০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। নিয়মানুযায়ী নামজাজি এবং হালসন খাজনা পরিশোধ করেছেন আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ। ২০০৭ সাল থেকে এই অ্যাকাডেমি কমপ্লেক্সে শুরু হয় শিক্ষাকার্যক্রম। কিন্তু এলাকার শওকত ইকবাল চৌধুরী আইআইইউসির কিনে নেয়া জায়গা বিএস দাগ নম্বর ১২৯৪২ এ দশমিক ১৩২০ শতকের ওপর হঠাৎ করে আনসার সদস্য নিয়োগ করে দখল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মহিউদ্দীন হোছাইন নয়া দিগন্তকে জানান, বর্তমানে আনসার সদস্যরা যে ঘরটিতে অবস্থান করছে, তা আইআইইউসি কর্তৃপক্ষের। আবস্থানকারী আনসার বাহিনী আমাদের ক্রয়কৃত জমি ভরাট ও অন্যান্য নির্মাণসংক্রান্ত কাজে বাধা প্রদান করছে। তিনি বলেন, জবর দখলকারী শওকত ইকবাল চৌধুরী একজন ভূমিদস্যু এবং প্রতারক। তার বিরুদ্ধে
থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে শওকত ইকবাল এক জায়গা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। একইভাবে অনেকের জায়গা অবৈধভাবে দখল করেছেন। ২০০৯ সালের ২৮ জানুয়ারি ৪২২ নম্বর দলিল মূলে শওকত ইকবাল চৌধুরী আইআইইউসি কর্তৃপক্ষের কাছে ৫ দশমিক ২ শতক জায়গা বিক্রি করে। কিন্তু আবার বিক্রীত ওই জায়গা থেকে একই বছরের ৯ এপ্রিল বোয়ালখালী উপজেলার আমজাদ ফারুকের কাছে ৩ শতক সম্পত্তি বিক্রি করেন।
এ দিকে প্রফেসর মোহাম্মদ আয়ুব নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, বহদ্দরহাট এলাকায় তার সাড়ে ৮ গণ্ডা জায়গা শওকত ইকবাল চৌধুরী দখল করে
রেখেছেন। একইভাবে তার এক নিকট আত্মীয়ের জায়গা অবৈধ দখলে রেখেছেন। এ দিকে আইআইইউসি মহিলা অ্যাকাডেমি কমপ্লেক্সের জায়গা অবৈধ দখলের পাঁয়তারার বিষয়ে আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ সিএমপির সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ পুলিশ সুপার বরাবরে একটি অভিযোগ করলে তা তদন্তের পর পুলিশ পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক এক প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে শওকত ইকবালের আইআইইউসির জায়গা দখলের প্রচেষ্টার বিষয়টি উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক জানান, বিএস দাগ ১২৯৪৩ এবং ১২৯৪৪ দাগে শওকত ইকবাল
মালিকানাধীন ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ জায়গার মধ্যে ৩ দশমিক ২০ শতাংশ জমি আইআইইউসির কাছে বিক্রয় করলেও তা এখনো জবর দখল করে আছে। এ ছাড়া বিরোধীয় বিএস ১২৯৩১,১২৯৩২ এবং ১২৯৩৬ দাগে সর্বমোট ৭৭ শতাংশ সম্পত্তির মধ্যে ৬১.৬৩ শতাংশ সম্পত্তি শওকত ইকবালের ভাইবোনসহ অন্যদের কাছ থেকে আইআইইউসি ক্রয় করে। এর মধ্যে ৭ শতক জমি ইকবাল চৌধুরী তার নিজের দাবি করলেও তার স্বপক্ষে
কোনো কাগজপত্র আমাদের কাছে উপস্থাপন করতে পারেননি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শওকত ইকবাল চৌধুরীর সাথে মোবাইলে একাধিকবার
যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সংবাদসূত্রঃ নয়াদিগন্ত।
0 comments:
Thank you