আমাদের কথা

IIUC News আই আই ইউ সি ক্যাম্পাসের প্রথম ও সবচেয়ে বড় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। প্রতিদিন ৩ হাজারের ও বেশী ভিজিটর ভিজিট করছেন আই আই ইউ সিয়ানদের এ সাইট।

ব্রেকিং নিউজ

★যারা স্পেশাল পরীক্ষার জন্যে আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে নির্বাচিতদের পরীক্ষা আগামী 9 তারিখ বেলা 10 টায় হবে .★অটাম 2016 এর অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম (ছাত্রী-ছাত্র) 20 এ অক্টোবর হবে।এবং আগামী 03 নভেম্বর তারিখ আবার ভর্তি পরীক্ষা হবে। ফরম নেওয়ার শেষ সময় 01.11.2016 তারিখ। }

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউ জি সি) এর নির্দেশনা মোতাবেক আই আই ইউ সি অথরিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একডেমিক কার্যক্রম সীতাকুন্ডের কুমিরায় আই আই ইউ সির নিজস্ব ক্যাম্পাসে শুরু করেছে। বাইরে আই আই ইউ সির আর কোন আউটার ক্যাম্পাস নাই। সরকারের এ সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা ও মোবারকবাদ

সেরারা কেন সেরা? : সুশান্ত পাল

শুধুই চাকরি করতে জানাটা মহাসৌভাগ্যের ব্যাপার। চাকরি মানে, শুধু চাকরিই। আপনি অন্যকিছু করতে না জানলে শুধু চাকরি করাই আপনার চাকরি। আর জানলে, চাকরি করা আর সেসব করা, দুই-ই আপনার চাকরি। মানে, আপনাকে দায়িত্ব নিতে হবে। চাকরিতে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে জানাটা মস্তো বড় একটা আর্ট। রাখতে না পারলে, আপনাকে ধরে কিছু কাজ ধরিয়ে দেয়া হবে। এর কোনটাতে ভুল করা চলবে না। আপনি অন্যকিছু করতে না জানলে আপনার সুবিধে, আপনি ‘বেঁচে’ গেলেন। যারা করতে জানে, আপনি ওদের ভুল ধরতে পারবেন। আবার আপনি অন্যকাজ করতে জানেন না বলে কারোর বাপের সাধ্য নাই আপনার ভুল ধরার। করেনই না, ভুল করবেন কী? যে করে, সে-ই শুধু ভুল করে। যে করে না, সে মনেমনে সবকিছুই ঠিকভাবে করে। আমরা টিভি’র সামনে বসে বসে ছক্কা-পেটানো জাতি। হায়! এই জগতে ছাগল আর গাধারাই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ!
আপনি করতে জানেন, এর মানে, আপনার আশেপাশের সবাই ধরেই নেবে, ওরা কাজটা করলে আপনার চাইতেও ভালোভাবে করতে পারত।
হাজার হাজার লোকের সামনে ষ্টেজে দাঁড়িয়ে আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতে পারেন। ওদের একবার দাঁড় করিয়ে দিয়ে দেখুন। মিনিটের পর মিনিট কয়বার বাথরুম পায়, মিনিটে কয়বার হাত-পা কাঁপে, আঞ্চলিক তোতলামো ক্কাহাকে বলে ক্কত প্রকার ও ক্কী ক্কী, কীভাবে চুলে আকস্মিক উকুনের উপদ্রব হয়, হাত কোথায় কোথায় হারিয়ে যায়, ঘাড়কোমরের ড্যান্স কত বিচিত্র মনোহর।
আপনি ভালো লিখতে পারেন। যারা বেশি ফটরফটর করে, ওদের এক লাইন লিখতে দিন। ‘ললাট মোর ভেসে গেল দুই নয়নের জলে,/ মোর পা দু’খানা তখন বাঁধা ছিল ডালিমগাছের ডালে।’ জাতীয় অলেখা প্রসব করে ভরিয়ে ফেলবে। এই গল্পের কাহিনী জানেন তো? আচ্ছা, বলছি। কবিতা লিখতে হলে শান্তি নিকেতন লাগবেই, এমন নয়। মাথায় জিনিস থাকা চাই। শান্ত পাহাড়ের গায়ে-থাকা এক কুটিরে বসে বসে এক উচ্চশিক্ষিত লোক কবিতা লেখা শুরু করল এইভাবে, ললাট মোর ভেসে গেলো দুই নয়নের জলে ……. এরপর ভাবতে লাগলো, চোখের পানিতে কপাল ভেজে! ক্যামনে কী! আবার ওই লাইনটা চেঞ্জ করতেও মন চায় না; কতো অসাধারণ একটা কথা আমার অতিউর্বর মাথা প্রডিউস করল! কী করি কী করি ভাবতে ভাবতে অনেকক্ষণ পর সে ২য় লাইনটা লিখল, মোর পা দু’খানা তখন বাঁধা ছিলো ডালিম গাছের ডালে। ……. বুঝুন অবস্থাটা!!
আমি বিশ্বাস করি, এসব জিনিস সহজাত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধনা করে আর যা-ই হোক, সেরা হওয়া যায় না। কিছু ব্যাপার রক্তে থাকে।
মান্না দে’কে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “একজন গ্রেট আর্টিস্ট হতে হলে কী করতে হবে?” উনার উত্তরটা আমার আজীবন মনে থাকবে। উত্তরটা ছিল, “আর্টিস্ট হতে হলে অনেক সাধনা করতে হবে। কিন্তু গ্রেট আর্টিস্ট হতে হলে ঈশ্বরপ্রদত্ত প্রতিভা থাকা চাই।”
শ্রীকান্তকে একটা অনুষ্ঠানে প্রশ্ন করা হয়, “আপনার জীবনে কোনো দুঃখবোধ আছে?” উনার উত্তর ছিল, “দুঃখবোধ নেই, তবে একটা আফসোস আছে। সংগীতে আমি সারাজীবন অশিক্ষিতই রয়ে গেলাম। আমি একজন স্বশিক্ষিত শিল্পী।” বন্ধুদের জানিয়ে রাখি, উনার গান শেখাটা হয়েছিল শুনে, অনুভব করে। আরেকজন গ্রেট আর্টিস্ট নচিকেতার মতো সেই ছোটোবেলা থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাঁর নেই। তাঁর বাবা চাইতেন, ছেলে বড় হয়ে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে জয়েন করুক। (এটা ভেবে কেমন জানি খুশি খুশি লাগছে।) আমরা যখন জানতে পারি, এক মৃত্যু পথযাত্রী তরুণী ক্লিনিকের বেডে শুয়ে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে শেষ ইচ্ছে হিসেবে এটা প্রার্থনা করেন যে শ্রীকান্তের ‘আমার সারাটা দিন, মেঘলা আকাশ, বৃষ্টি — তোমাকে দিলাম’ ওর রুমে বাজুক, তখন আমরা আরেকবার ভাবতে থাকি, এরকম একটুআধটু শুনেটুনেও ভালো গাওয়া যায়। কিছু কিছু ছেলে মানুষ না হয়ে লক্ষ্মীছাড়া হোক। সবাই মানুষ হবে কেন? কিছু কিছু পাগল হোক। আমরা চাই, হেমন্তরা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছেড়ে গাইতে আসুক। বিনয় মজুমদাররা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে পড়ুক, এরপর একদিন সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে ধুম করে একখানা ‘ফিরে এসো, চাকা’ লিখতে বসে যাক। এসবকিছু কি সাধনাতে হয়েছিল? শ্রীকান্তের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা যে একেবারেই ছিল না, তা কিন্তু নয়। দক্ষিণী’তে রবীন্দ্রসংগীত শিখেছিলেন, পরে উস্তাদ আলী আহমদ খানের কাছে তবলাও শেখেন। বুঝলাম। কিন্তু সে তো অনেকেই শেখে! শ্রীকান্ত হয় কয়জন? অতোটা অনুভব করে গাইতে গেলে যে সরস্বতীর কৃপা লাগে!
কুমার শানুকে একবার এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলেন, “শানুদা, আপনি প্রতিদিন কয় ঘণ্টা করে রেওয়াজ করেন?” কুমার শানু প্রশ্নটা কৌশলে এড়িয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলেন। ইন্টারভিউয়ার নাছোড়বান্দা। আবারো একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করাতে শানু বললেন, “আচ্ছা, আপনি আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট কতবারে পেয়েছেন?” উত্তর এল, “তৃতীয়বারে, দাদা।” এরপর শানু বললেন, “তাহলে ভেবে দেখুন আমাকে কতটা ব্যস্ত থাকতে হয়! যতটা ছবিতে সাইন করি তার দ্বিগুণ ছবি ফিরিয়ে দিই। আমার রেওয়াজ করার সময় কোথায়? আমি গত ৮ বছরে রেওয়াজ করার সময়ই তো পাইনি!”
স্ত্রী অ্যানির জন্যে লেখা ‘ইউ ফিল আপ মাই সেন্সেস’ লিখতে জন ডেনভার সময় নিয়েছিলেন ১০ মিনিট। ভদ্রলোক স্কিয়িং ক’রছিলেন, এরই এক ফাঁকে লিখেছেন এই জনপ্রিয়তম গানটি।
হয়তো কথা রাখেনি এমন কারোর কিংবা কারো কারোর ওপর অভিমান করে লেখা ‘কেউ কথা রাখেনি’ লিখতে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সময় লেগেছিলো ১৫-২০ মিনিট। পত্রিকার ছাপবার জন্যে কবিতা চাইতে আসা এক ভদ্রলোককে ড্রয়িংরুমে বসিয়ে রেখে ‘আপনি একটু বসুন, আমি কবিতাটা নিয়ে এই আসছি’ বলে ভেতরের রুমে পালিয়ে কবি লিখেছিলেন পরবর্তীতে অসংখ্যবার আবৃত্তি হওয়া এই চমৎকার কবিতাটি।
মাত্র ২২ বছর বয়সে হুমায়ূন আহমেদ নন্দিত নরকে লিখেছিলেন এক রাতে। “আমার মৃত্যুর পরে আমার সাথে তোমরা গীতা দিয়ো না, পুতুলনাচের ইতিকথা’টা দিয়ো।” সন্দীপন তাঁর ডায়েরিতে লিখেছেন। এই উপন্যাস মানিক লিখেছিলেন মাত্র ২২ বছর বয়সে। ২২ বছরের একটা যুবকের কয়টি বই পড়া থাকতে পারে? ২২ বছর বয়সের প্রস্তুতি কতটুকু? আমাকে ২২০ বছর আয়ু দিয়ে ২২ হাজার বই পড়ার সুযোগ করে দিলেও ওরকম একটা নন্দিত নরকে কিংবা পুতুলনাচের ইতিকথা লিখতে পারব?
করন জোহর তাঁর ‘কাভি খুশি কাভি ঘাম’ মুভিতে ‘সুরুজ হুয়া মাধ্যাম’ গানটি বাদ দেয়ার প্ল্যান করেছিলেন। কারণ তাঁর ধারণা ছিল, গানটি দর্শকরা ‘খাবে না’। বন্ধু শাহরুখের পরামর্শে উনি এটা মুভিতে দেয়ার ‘রিস্ক’ নিয়েছিলেন। বাকিটা তো আমরা জানিই। কাল হো না হো মুভিতে শাহরুখকে মেরে ফেলার আইডিয়া করনকে শাহরুখ নিজেই দিয়েছিলেন। উনার পরামর্শেই মুভির স্ক্রিপ্ট বদলে ট্র্যাজিক এন্ডিং দেয়া হয়। মুভিতে শাহরুখের কিছু ডায়লগ আছে, যেগুলো শট নেয়ার সময় শাহরুখ ওই মুহূর্তেই বানিয়ে বলেছিলেন। এই সেন্স কোন ‘সহজ পদ্ধতিতে গ্রেটনেস শিক্ষা’ পড়ে ডেভেলাপ করা সম্ভব?
কিছুদিন আগে ফেসবুকে একটা হ্যাপি ফ্যামিলির ছবি এঁকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম যেটা আমার সবচাইতে বেশি ‘লাইক’ পাওয়া স্ট্যাটাসগুলোর একটি। (অন্তত ২০০০+ লাইক ছিল।) কথা সেটা নয়। ওটা পোস্ট করার কয়েক মিনিট পরেই ২০০’র মত লাইক দেখে আমার এক শুভাকাঙ্ক্ষী সিনিয়র ফোন করে জানতে চাইলেন, আমি কোথায়? কী করছি? কাজটাজ ঠিকভাবে করছি কিনা? এর কিছুক্ষণ পরেই আমাদের এয়ারপোর্ট টিম প্রায় ১০ কেজি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে। এখন ফ্যাক্টটা শেয়ার করি। ওটা লিখতে আমার সময় লেগেছিল ১৫ মিনিটের মতো। ওটা আমি লিখেছি আমার আনস্মার্ট ফোনে বাংলায় টাইপ করে ডিউটিতে থাকার সময়েই।
২ ঘণ্টার কাজ করতে সবারই কিন্তু ২ ঘণ্টা লাগে না।
কেউ কেউ ওটা করে ২ ঘণ্টায়।
কেউ কেউ ওটা করে আধা ঘণ্টায়।
কেউ কেউ ওটা করে ৮ ঘণ্টায়।
ভাই, আপনি যদি ফার্স্ট কিংবা থার্ড ক্যাটাগরিতে পড়েন, তবে সেকেন্ড ক্যাটাগরির লোকের বেঁচে-যাওয়া সময়ে একটু আনন্দে জীবন কাটানো দেখলে আপনার গা জ্বলে কেন? গা চুলকায় কেন? বাজারে ইদানীং চুলকানির ভাল ভাল মলম পাওয়া যায়। একটা মলম কিনেন ভাই, কী আছে আর জ্যাবনে? ইউ হ্যাভ টু বুঝতে হবে। বুঝতে না পারলে, ইউ হ্যাভ টু মুড়ি খেতে হবে।

0 comments:

Thank you

Copyright © Fri3nClay IIUC News