স্কুলের ‘অমনোযোগী’ ছাত্রটির নোবেল জয়
সংবাদ সম্মেলনে এ বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার জয়ী জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক ইয়োশিনোরি ওশুমি। ছবি: রয়টার্স
একসময় স্কুলের সবচেয়ে ‘অমনোযোগী’ ও ‘কম মেধাবী’ উপাধি পাওয়া ছাত্রটিই এবার চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
এই নোবেলজয়ী শৈশবে স্কুল ফাঁকি দিতেন, অনেক দিন কাটিয়েছেন অনাহারে।
জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক ইয়োশিনোরি ওশুমি নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর টোকিওতে সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
প্রায় তিন দশক আগে কোষের আত্মভক্ষণ (অটোফাজি) বিষয়ক ধারণা দেয়ায় সোমবার স্টকহোমের নোবেল কমিটির ঘোষিত এবারের চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পাওয়া ওশুমি বলেন, “আমার তুখোড় মেধা ছিল না। ছোটকালে মাধ্যমিক স্কুলে থাকাকালীন সবচেয়ে কম পড়াশোনা করতাম। স্কুলের রসায়ন ক্লাবের সদস্য ছিলাম। ওই সময় আমি রাসায়নিক পদার্থগুলোকে একত্রে মিশিয়ে প্রায় দিনই মজা করতাম আর জ্যেষ্ঠ ছাত্রদের বকুনি খেতাম। আমি মনে করতাম, রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ নতুন কিছু এনে দেয়। কিন্তু কি বিক্রিয়া হচ্ছে তা বলার মতো কোনো জ্ঞান আমার তখন ছিল না।”
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক ছয় মাস আগে জন্ম নেয়া রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ফেলোর বাবা ও পিতামহ উভয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন। আর্থিক অসঙ্গতি না থাকলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে ওশুমিকে অভাবের মধ্য দিয়ে বড় হতে হয়।
ওশুমি বলেন, “ছোটকালে খাবার কম খেতে পাওয়ায় আমি প্রায় রোগাই ছিলাম দেখতে। আর ওই সময় আমার মা যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন বিছানায় পড়েছিলেন। কৌতূহলবশত মায়ের জন্য সদ্য পাওয়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিষয়ক ধারণা সেই সময় পেয়েছিলাম।”
এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে বেড়ে ওঠা ইয়োশিনোরি ওশুমির বাল্যকাল কেটেছে প্রতিবেশী কৃষকদের কৃষিকাজ উপভোগের মধ্য দিয়ে। নদী, পাহাড় আর মাঠ দাপিয়ে চলা এই কিশোর রাতের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য উপভোগ করে।
ছোটকালের স্মৃতিচারণে ওশুমি বলেন, “আমি কীটপতঙ্গকে খুব ভালবাসতাম তাই এদেরকে সংগ্রহ করে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতাম।”
১৯৮৮ সালে ইস্ট কোষের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ও কোষীয় আর্বজনা ‘আত্মভক্ষণ’ কৌশলের ব্যাখ্যা দেয়া এই অধ্যাপক আরো বলেন, “আমার বাবা-মা চাইতো আমি প্রাকৃতিক বিষয় নিযে গবেষণা করি, তাই ছোটকাল থেকে এই প্রকৃতির প্রতি ধারণা নেয়া ছিল আমার ব্রত।”
২৮ বছর ধরে অটোফাজি বিষয়ে গবেষণা করে আসলেও শিল্প, সাহিত্য ও খেলাধুলায় তার কোন গুণ ছিল না বলে তিনি স্বীকার করেন।
0 comments:
Thank you