মেয়েদের একাকী সংগ্রাম
পাশ করার পরে একটা ছেলে ক্যারিয়ার স্টাবলিস্ট করার সময় যত খুশি সময় নিতে পারে। অথচ মেয়েদের পড়ালেখা শেষ করার আগেই বিয়ে দিয়ে দেয়। কেউ কেউ চাকরি শুরু করলেও, জোর করে বিয়ে দিয়ে দিবে। যে মেয়ে সারা জীবনে একটা থালা বাসনও ধোয়নি, সেই এক লাফে হয়ে গেলো রাঁধুনি। সার্টিফিকেটগুলো সুটকেসে বন্ধী রেখে রান্না ঘরে পেয়াজ কাটাতে বাধ্য হয়। বড় হবার স্বপ্নগুলো পেয়াজের ঝাঁজের সাথে মিশিয়ে চোখের কোনা দিয়ে, ফোটায় ফোটায় অশ্রু ফেলে। অথচ ছেলেদের চাইতে বেশি কষ্ট করে, অনেক অনেক বেশি সামাজিক বাধা অতিক্রম করে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। সারাজীবনের কষ্টের আউটপুট আসার আগেই ক্যারিয়ার শেষ। যে বৃক্ষ ফল দেয়ার কথা, সে বৃক্ষ কেটে, কাঠের আগুনে বারবিকিউ করা হচ্ছে।
মজার বিষয় হচ্ছে- বিয়ের পর চাকরি না করলেও সংসারের যত দায়িত্ব পালন করা লাগে, চাকরি করলে ঠিক ততগুলা দায়িত্ব পালন করার পরেও ডজন খানেক বেশি দায়িত্ব পালন করা লাগে। আর বাচ্চা কাচ্চা হইলেতো কথাই নাই। শুধু বাচ্চা পয়দা করা না, বাচ্চার ডায়পার পাল্টানো, গোসল করানো, বাচ্চার শরীর খারাপ হলে রাতভর জেগে থাকা- সব দায়িত্ব মায়ের। বাচ্চাকে ফেলে রেখে মা অফিস চলে যাচ্ছে- এইটা দেখে বাচ্চা যখন নন স্টপ কান্না শুরু করে দেয়, তখন বাচ্চাকে রেখে অফিসে যেতে মায়ের বুকে কি পরিমাণ হাহাকার হয় তা শুধু মায়েরাই জানে।
আরেক
টা মজার বিষয় হচ্ছে -ফ্যামিলি জোর করে মেয়েকে বিয়ে দিবে কিন্তু সেই বিয়েতে কোন ঝামেলা হইলে, ফ্যামিলির কোন দোষ হয় না। দোষ হয় মেয়ের। ছেলের ক্যারেক্টার খারাপ হইলেও, মেয়ের দোষ। জামাইকে সংসার মুখি করতে না পারা মেয়ের দোষ। সংসার না টিকা, মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে না পারা, মেয়ের দোষ। শারীরিক মানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে, ডিভোর্স দিয়ে বাপের বাড়ি ফেরত আসতে বাধ্য হইলে, সকাল বিকাল বাবা-মায়ের খোটা শুনতে হয়। পদে পদে বুঝিয়ে দেয়া হয়, সে একটা বোজা। তার কারণে অন্য ভাই বোনদের ভালো বিয়ে হবে না। এত কিছুর পরেও মেয়েরা থেমে থাকে না। এগিয়ে যাচ্ছে, আরো যাবে।
0 comments:
Thank you